
নেতা বলেন, ১৩ই অবন (৪ নভেম্বর) ইরানের ইতিহাসে এক “গৌরব ও বিজয়ের দিন” — যেদিন ১৯৭৯ সালে ইরানের ছাত্ররা আমেরিকার দূতাবাস দখল করে, যা “ইসলামী বিপ্লববিরোধী ষড়যন্ত্রের কেন্দ্র” হিসেবে পরিচিত ছিল।
তিনি এই দিনটিকে জাতীয় স্মৃতিতে সংরক্ষণ করার আহ্বান জানান এবং বলেন,
“আমেরিকার সঙ্গে শত্রুতা শুরু হয়েছিল ১৯৫৩ সালের ২৮ মর্দাদের অভ্যুত্থান দিয়ে, এবং আজও তা অব্যাহত রয়েছে।”
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেন, ১৯৫৩ সালে ব্রিটেনের সহায়তায় আমেরিকা জাতীয় নেতা ড. মোসাদ্দেকের সরকারকে উৎখাত করে, এবং তার মাধ্যমে ইরানের ওপর পুনরায় একনায়ক শাহশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি বলেন — “আমেরিকা তখন থেকেই ইরানের সম্পদ ও স্বাধীনতার শত্রু হয়ে উঠেছে। ইসলামী বিপ্লব সেই দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়েছে — এবং সেটাই আজ তাদের ক্রোধের মূল কারণ।”
নেতা আরও বলেন, আমেরিকার বৈরিতা কেবল কথায় নয় — তারা ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, প্রচারণা যুদ্ধ, সাদ্দামকে উসকে দেওয়া, ৩০০ যাত্রীসহ ইরানি বিমান ভূপাতিত করা, এমনকি সরাসরি সামরিক হামলার মতো অপরাধ করেছে।
তিনি বলেন, “তাদের শত্রুতা আমাদের ‘মৃত্যু হোক আমেরিকার’ শ্লোগানের কারণে নয়, বরং কারণ ইসলামী বিপ্লব তাদের আধিপত্যকে ভেঙে দিয়েছে।”
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি জোর দিয়ে বলেন, “দেশের সমস্যার সমাধান শুধু শক্তিশালী হওয়াতেই — ব্যবস্থাপনা, বিজ্ঞান, সামরিক ও আত্মিক দিক থেকে।”
তিনি সরকারকে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এবং বলেন,
“যদি দেশ শক্তিশালী হয়, শত্রু বুঝবে যে এই জাতির সঙ্গে সংঘর্ষে লাভ নয়, বরং ক্ষতি।”
নেতা আমেরিকার সাম্প্রতিক “ইরানের সঙ্গে সহযোগিতার ইচ্ছা” প্রসঙ্গে বলেন — “যে দেশ আজও অভিশপ্ত জায়নবাদী শাসনকে সহায়তা করে, তার সহযোগিতার প্রস্তাব অর্থহীন।”
তিনি আরও বলেন, “যদি আমেরিকা সত্যিই আন্তরিক হয়, তবে প্রথমে তাদের উচিত এই সমর্থন বন্ধ করা, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ঘাঁটি গুটিয়ে নেওয়া, এবং অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা — তখনই বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে, কিন্তু তা নিকট ভবিষ্যতের বিষয় নয়।”
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি যুবসমাজকে আহ্বান জানান — “হযরত ফাতেমা (সা.) ও হযরত যায়নাব (সা.)-এর জীবনধারা থেকে শিক্ষা নাও, নামাজে মনোযোগী হও, কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করো এবং অন্তরে ঈমান ও আত্মিক শক্তি গড়ে তোলো।”
তিনি বলেন — “শুধুমাত্র তখনই আমাদের তরুণ প্রজন্ম সত্যিকার অর্থে ‘মৃত্যু হোক আমেরিকার’ স্লোগানের মানে উপলব্ধি করতে পারবে, যখন তারা অন্তর থেকে আল্লাহর ওপর নির্ভর করবে ও আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী হবে।”
এই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পুনরায় স্পষ্ট করেছেন যে, আমেরিকার সঙ্গে ইরানের দ্বন্দ্ব কোনো রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং স্বাধীনতা ও আধিপত্যবাদের মধ্যে এক চিরন্তন আদর্শিক সংঘাত।4314495#